পেঁয়াজ চাষে খ্যাত ঢাকার পাশের জেলা মানিকগঞ্জ। অনুকূল আবহাওয়া আর উত্তম পরিচর্যায় এখানে পেঁয়াজের ফলনও ভালো হয়। জেলার সাতটি উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে আবাদ হয় পেঁয়াজের। তবে শিবালয়, হরিরামপুর, ঘিওর, দৌলতপুর এবং সিংগাইর উপজেলায় পেঁয়াজের আবাদ বেশি হয়। আর তাই চলতি মৌসুমেও পেঁয়াজ চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন এই এলাকার কৃষকেরা।
শনিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। পেঁয়াজ চাষে অধিক মুনাফার আশাবাদী হলেও বাজারদর নিয়ে হতাশার অভিমত ব্যক্ত করেন অনেকেই।
শিবালয় উপজেলার মহাদেবপুর ইউনিয়নের মতিয়ার রহমানের ছেলে শরিফুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে এক বিঘা (২৭ ডিসেমল) জমিতে হাল চাষ, সার, কীটনাশক, বীজ ও শ্রমিকের পারিশ্রমিক ও অন্যান্য খরচসহ মোট ২৬ থেকে ২৯ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রতি বিঘা জমি থেকে ৪০ থেকে ৪৫ মণ পেঁয়াজের ফলন হবে। বাজারদর ভালো থাকলে মুনাফা ভালো হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ঘিওর এলাকার কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, প্রতি বছর পেঁয়াজের বীজ ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা (প্রতি মণ) ক্রয় করতে পারলেও এবার একই বীজ কিনতে হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা করে। এক বিঘা জমির জন্য পাঁচ মণ বীজের প্রয়োজন। অন্যান্য জিনিষের দামও তুলনামূলক বেশি। যে কারণে পেঁয়াজ চাষে এবার খরচও বেশি। পেঁয়াজের বাজারদর একেবারে কমে গেলে লোকসান গুনতে হবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
একই এলাকার কৃষক মোন্তাজ আলী বলেন তিন যুগ ধরে নিয়মিতভাবে পেঁয়াজের আবাদ করেন তিনি। গত কয়েক বছর পেঁয়াজের বাজারদর তুলনামূলক কম থাকায় আগ্রহ কমে আসছে। তবে এবার পেঁয়াজের উচ্চ বাজারদরের কারণে চলতি মৌসুমে লাখ টাকা খরচ করে চার বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছেন। বাজারদর কমে গেলে লোকসান গুনতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক হাবিবুর রহমান চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে বলেন, গেলো বছর মানিকগঞ্জে প্রায় চার হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছিল। চলতি মৌসুমে মানিকগঞ্জে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৫ হাজার ৮০০ হেক্টর। এরই মধ্যে জেলার বিভিন্ন এলাকার ২৮৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। বাকী জমিতে পেঁয়াজের আবাদ নিয়ে কৃষকেরা ব্যস্ত রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পেঁয়াজের ফলন ভালো হবে বলে আশাবাদী এই কৃষি কর্মকর্তা।