গণকবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, র্যালি ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে বরগুনায় পালিত হয়েছে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত।
সাগরপাড়ি খেলা ঘর আসর বরগুনা জেলা শাখার আয়োজনে ও সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ ‘৭১’ এর সহযোগিতায় মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে সকালে জেলা প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সাগরপাড়ি খেলাঘর সভাপতি বেবী দাসের সভাপতিত্বে সভায় জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ, পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন, বরগুনা হানাদার মুক্ত করার নেতৃত্বদানকারি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. ছাত্তার খান, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ-৭১ এর সভাপতি আনোয়ার হোসেন মনোয়ার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুল রশিদ, প্রেসক্লাব সভাপতি চিত্ত রঞ্জন শীল প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এর আগে শহীদ স্মৃতি সড়কের গণকবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। সভা শেষে প্রেসক্লাব চত্বর থেকে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ২ ডিসেম্বর রাতে বেতাগীর কালিকা বাড়ি থেকে আব্দুস ছাত্তার খানের নেতৃত্বে ২১ জনের মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল নৌকা যোগে কারাগার, ওয়াবদা কলনী, জেলা স্কুল, সদর থানা, ওয়ারলেস স্টেশন, এসডিওর বাসায় অবস্থান নেয়।
মুক্তিযোদ্ধারা যে যার অস্ত্র নিয়ে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী অবস্থান নেন এবং ফজরের আজানকে যুদ্ধ শুরুর সংকেত হিসেবে ব্যবহার করেন। আযান শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ৬টি স্থান থেকে একযোগে ফায়ার করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। দ্বিতীয় দফা ফায়ার করে তারা জেলখানার দিকে এগোতে থাকেন। চারজন সহযোগিসহ সত্তার খান ছিলেন কারাগার এলাকায়। তারা এসময় জেলখানায় অবস্থানরত পুলিশ ও রাজাকারদের আত্মসমর্পন করিয়ে এসডিও অফিসের সামনে নিয়ে আসেন। কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা গিয়ে স্বাধীনতাকামী তৎকালীন এসডিও আনোয়ার হোসেনকে মুক্ত করেন। দুপুর ১২টার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা প্রশাসনিক দায়িত্ব এসডিওকে সাময়িকভাবে বুঝিয়ে দিয়ে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে বুকাবুনিয়া সাব-সেন্টারে চলে যান। সেদিন থেকেই বরগুনা হানাদার মুক্ত হয়।