সিরাজগঞ্জ বেসরকারি ইকোনোমিক জোন (ইপিজেড) নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণ করা জমি, বসতভিটা, ফসল ও গাছপালার ক্ষতিপূরণ না দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে জমি মালিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
অভিযোগ আছে, কয়েকজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নামধারী নেতা ও ঠিকাদার ইপিজেড কর্মকর্তাদের জোকসাজসে জমি মালিকদের ক্ষতিপূরণ না দিয়েই উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ফলে যেকোনো সময় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় জমি মালিকরা দ্রুত ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করার দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার ও বঙ্গবন্ধু সেতুর দক্ষিণপাশে সিরাজগঞ্জ সদরের সায়দাবাদ ও বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের সিরাজগঞ্জ ইকোনোমিক জোন নির্মাণ করা হবে। ১১টি শিল্পোদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত কনসোর্টিয়ামকে এ জন্য লাইসেন্স দিয়েছে সরকার। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সায়দাবাদ ও রাজাপুর ইউনিয়নের পাঁচটি মৌজার ১০.৩৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। শুরুতেই উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া ও ইকোনোমিক জোনে চাকরি দেয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।
সে সময় জমি অধিগ্রহণের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসনকে। সে মোতাবেক প্রায় ২২শ জমি মালিক ক্ষতিপূরণ চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর বসতভিটা ও জমির দলিল জমা দেন। এরমধ্যে প্রায় অর্ধেক জমির মালিকদের নামমাত্র ক্ষতিপূরণ দেয়া হলেও বাকিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে না। ইতোমধ্যে জমি মালিকরা প্রধানমন্ত্রীর বরাবর যথাযথ ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন।
একাধিক জমির মালিক জানান, তারা নদী তীরের বাসিন্দা। প্রতিবছর ভাঙন ও বন্যায় তাদের জমি বিলীন হচ্ছে। শেষ সম্বল বলতে বসতভিটা টুকু আঁকড়ে বেঁচে আছেন তারা। এখন এই জমিতে ইপিজেড নির্মাণ হলেও তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়নি। এখন সংশ্লিষ্টরা নানাভাবে তাদের উচ্ছেদের হুমকি দিচ্ছে। তবে ক্ষতিপূরণ পরিশোধ না করে ইপিজেড’র কাজ শুরু করা হলে তা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
ইকোনোমিক জোনের পরিচালক শেখ মনোয়ার হোসেন জানান, প্রকল্পটি সুন্দরভাবে বাস্তবায়নের জন্য জমি অধিগ্রহণ বাবদ প্রায় তিনশ কোটি টাকা জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে জেলা প্রশাসন জমি মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেবে। এক্ষেত্রে তাদের কোনও দায়িত্ব নেই বলেও জানান তিনি।
সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বী ও ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা তানজীল পারভেজের কাছে ক্ষতিপূরণের তথ্য জানতে চাইলে তারা তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।