রংপুরের পীরগাছায় আমনক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণে দিশেহারা কৃষকরা। তাদের অভিযোগ, কৃষি বিভাগের সহযোগিতা চেয়েও পাচ্ছেন না।
জানা গেছে, বন্যার কারণে দেরিতে আমন আবাদ করলেও বাম্পার ফলন পেতে আশায় বুক বেঁধেছিলেন চাষিরা। কিন্তু ক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণে সেই আশা নিরাশায় পরিণত হয়েছে। এমনকি কীটনাশক ও ফাঁদেও ইঁদুর ঠেকানো যাচ্ছে না। ফলে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে প্রায় ২০ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। মৌসুমের শুরুতেই বন্যার কবলে পড়েন কৃষকরা। বন্যায় ৩ হাজার ২০০ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন। তাদের মধ্যে ১০০ জনকে ৫ কেজি করে আমন ধানের বীজ বিতরণ করা হয়। কিন্তু বন্যার কারণে দেরিতে আমন চারা রোপণ করেন তারা। তবুও আমনের ক্ষেত সবুজ গালিচায় পরিণত হয়। তবে ইঁদুরের আক্রমণে কৃষকরা বর্তমানে দিশেহারা।
কৃষকদের অভিযোগ, শুধু বিভিন্ন মাঠ দিবসে উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের দেখা যায়। তারা একই এলাকায় নির্দিষ্ট কিছু সংখ্যক কৃষককে নিয়ে বারবার লোক দেখানো মাঠ দিবস পালন করেন। পোকা দমনে আলোর ফাঁদ পদ্ধতি নিয়েই তারা ব্যস্ত। কিন্তু ইঁদুর নিধনের বিষয়ে তেমন কোনও উদ্যোগ নেই কৃষি বিভাগের।
কান্দি ইউনিয়নের কাবিলাপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক জানান, জমিতে চারা লাগানোর পর ধান গাছ বেড়ে ওঠার সময়ই ইঁদুরের আক্রমণ শুরু হয়েছে। এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বর্গাচাষিরা। স্থানীয়ভাবে লাড্ডু ও কাঁকড়ায় কীটনাশক মিশিয়ে জমিতে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বৃষ্টির পানি জমে থাকায় ফল মিলছে না।
উপজেলার কৈকুড়ী ইউনিয়নের কৃষক তাজুল ইসলাম জানান, এলাকায় প্রায় ৬০-৭০ ভাগ আমনক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। ইঁদুর নিধনে উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে কোনও পরামর্শ পাওয়া যাচ্ছে না।
কান্দি ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল জলিল বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘ইঁদুর নিধনের জন্য কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের বিষ টোপ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমুর রহমান শামীম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘কৃষি বিভাগের বিরুদ্ধে কৃষকদের অভিযোগ সঠিক নয়। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা ইঁদুর নিধনে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।’
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সরওয়ারুল হক বলেন, ‘জমিতে প্রথমে বিষ ছাড়াই টোপ দিতে হবে। পরে বিষ মিশিয়ে টোপ দিলে কার্যকর ফল পাওয়া যাবে।’