বরগুনায় প্রথমবারের মত ইলিশ উৎসব হচ্ছে। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে দলবেঁধে ইলিশ উৎসবে আসছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। স্টল ঘুরে ঘুরে দেখছেন তারা। পছন্দ মতো কিনছেন ইলিশ। স্টলে স্টলে সাজিয়ে রাখা হয়েছে রান্না করা ইলিশের ১০০ রকমের পদ। আর বাহারি এসব রান্না করা ইলিশের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ছে মাঠের চারপাশে। এদিকে ৬ টি উপজেলার জন্য আলাদা আলাদা স্টল করে দেওয়া হয়েছে। স্টলগুলোতে উৎসবকে কেন্দ্র করে রান্না করা ইলিশের দামও খুবই কম। আর কাঁচা ইলিশের দামও নির্ধারণ করে দিয়েছে আয়োজকরা।
এদিকে কাঁচা ইলিশ ক্রয় করতে আসা ক্রেতারা দরদাম করে সাধ্যের মধ্যে কিনছেন নিজের পছন্দের মাছ। তবে সবার নজর বড় মাছগুলোর দিকে। কেউ কেউ মাছ ক্রয় না করলেও দেখার জন্য ভিড় করছেন। মাছ কেনার পর সবাই ছুটছেন রান্না করা ১০০ রকমের ইলিশ দিয়ে খাবার খেতে। উৎসবে প্রধান দুই আকর্ষণ মাছ কেনার পরই চলে ঘোরাঘুরির পর্ব। তবে নিদিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে কাঁচা ইলিশ ক্রয় বিক্রয় বিষয়টি। প্রতিজন ৩ টি ইলিশ ক্রয় করতে পারবেন।
উৎসবে ইলিশের বাহারি খাবারগুলো হল- ইলিশ বিরিয়ানি, ইলিশ খিচুড়ি, ইলিশ মাছের কাবাব, সরিষা ইলিশ, ইলিশ কোরমা, ইলিশ রেজালা, ইলিশ মালাইকারি, ইলিশ দোপেয়াজা, ইলিশ ফ্রাই, ইলিশ মাছের ভর্তা, ইলিশ বার -বি-কিউ, স্টিম ইলিশ, কোপ্তা ইলিশ, ইলিশ থাই গ্রভি, ইলিশ পাতুরি, ইলিশ পোলাও, ইলিশ ললিপপ, ইলিশ বল, ইলিশ কাটা লেট, দই ইলিশ,ইলিশ ভেজিটেবল, ভাপা ইলিশ, ইলিশ হিলশা ফিঙ্গার, ইলিশ ম্যান্ডারিন সুইট শাওয়ার এন্ড হিলসা রসা ইলিশ ভুনা ইলিশ, আনারস ইলিশ, টক-ঝাল-মিষ্টি ইলিশ, ভিনেগার ইলিশ, লাউপাতা ভাপা ইলিশ, ইলিশের ঝোল, ইলিশ মাছের ঝুড়ি, সস ইলিশ, নারিকেল ইলিশ, ইলিশের তান্দুরি, ধনিয়া ইলিশ, ইলিশ কশা ঝোল, ইলিশ কাচা ভুনা স্পেশাল ইলিশ ভাজা, স্পাইসি ইলিশ ভাজা, ইলিশের ডিম ফ্রাই, ইলিশের বেগুন ফ্রাইসহ ১০০ রকমের রান্না করা ইলিশ পাওয়া যায়।
এর আগে বুধবার (০২ অক্টোবর) সকালে বরগুনায় প্রথম এত বড় বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালি শেষে ইলিশ উৎসবটি উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এমপি। এরপর জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহার সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ইলিশের ওপরে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের পরে স্টলগুলো পরিদর্শন করেন প্রধান অতিথিসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা। বরগুনা সার্কেট হাউজ মাঠে চলবে দিনব্যাপী এ উৎসব। এদিকে উৎসবকে কেন্দ্র করে সার্কিট হাউজ মাঠে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
উৎসবে ঘুরতে আসা দিশা, সারা, বেলাল, নাজমুল, হাসিবসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বরগুনাতে এই প্রথম ইলিশ উৎসব হওয়াতে খুব আনন্দিত তারা।
মাটিয়াল ক্যাপের পরিচালক মুসফিক আরিফ বার্তাটোয়েন্টি ফোর.কমকে বলেন, এই উৎসবকে কেন্দ্র করে তাদের স্টলে ১০০ রকমের ইলিশের তৈরি খাবার রাখা হয়েছে। আর দামেও বিশেষ ছাড় রয়েছে। দিনব্যাপী এ আয়োজন চলবে।
জেলা টেলিভিশন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মোঃ সালেহ বার্তাটোয়েন্টি ফোর.কমকে বলেন জেলা প্রশাসন ও টেলিভিশন ফোরাম আয়োজিত বরগুনায় প্রথমবারের মত ইলিশ উৎসব আয়োজন করা হয়েছে। এখানে ইলিশের সব ধরনের খাবারে রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বার্তাটোয়েন্টি ফোর.কমকে বলেন, এই উৎসবে সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে সব উপজেলা থেকে তাজা ইলিশ আনা হয়েছে এবং রান্না করা ১০০ রকমের ইলিশের খাবার পাওয়া যাবে এখানে। বাংলাদেশসহ ১০ টি দেশে ইলিশ পাওয়া যায় তার মধ্যে বাংলাদেশের জলসীমানায় ৬৬ ভাগ পাওয়া যায়। যার মধ্যে বরগুনা জেলায় এক পঞ্চমাংশ পাওয়া যায়। তাই বরগুনা জেলা বাংলাদেশের ২য় অবস্থানে আছে।