বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলার ২০ গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা একটি বাঁশের সাঁকো। এ দুই উপজেলার আরপাঙ্গাশিয়া-পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নকে বিভক্তকারী খালের ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে হাজারও মানুষ চলাচল করছে।
জানা গেছে, খালের ওপর কোনো সেতু না থাকায় বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়েই নদী পারাপার করেন গ্রামের মানুষ। ৩০ বছর ধরে গ্রামবাসীর দুঃখের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এ সাঁকোটি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, খালের দুই পাড়ে দুই উপজেলা হওয়ায় সেতু নির্মাণে কেউ উদ্যোগী হয়না। তাই বাঁশের সাঁকোটিই তাদের চলাচলের একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন সাঁকো পার হয়ে দুই উপজেলার ৩ কলেজ, ৪ মাধ্যমিক স্কুল ও ৫ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী।
আরো জানা যায়, প্রায় ৩০ বছর আগে ওই খালে খেয়া নৌকা দিয়ে পারাপার করতে হতো। কিন্তু পরে সেটা বন্ধ হয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে সাঁকোটি তৈরি করেন। প্রতিবছর সাঁকোটির মেরামতের কাজও স্থানীয়রাই করেন। ব্যবসা-বাণিজ্য, হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ এবং দৈনন্দিন কর্মসংস্থানের কারণে সাঁকো পেরিয়ে যাতায়াত করতে হয় গ্রামবাসীদের। সংশ্লিষ্ট গ্রামগুলোর কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিক্রিসহ রোগীর জরুরি চিকিৎসার জন্যও ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হতে হয়।
স্থানীয়দের দাবি, সাঁকোটি ভেঙে সেখানে একটি সেতু নির্মাণ করা হলে ২০টি গ্রামের মানুষের জীবন পাল্টে যাবে।
স্থানীয় নুরুজ্জামান, সবুজ, জাহাঙ্গীর, রাজিব জানান, ৩০ ধরে এখানে একটি সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। নড়বড়ে এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন খাল পার হতে হয়। তবে বৃদ্ধা ও স্কুলের শিশুরা ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হন।
আমতলী উপজেলার আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একেএম নুরুল হক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'আমি অনেক আগেই একটি সেতু নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল ও আমলতী উপজেলা প্রকৌশলী ঘুষের টাকার জন্য প্রস্তাবটি অনুমোদন করেনি।'
আমতলী উপজেলার নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইতোমধ্যে সেতুর তৈরির জন্য আবেদন করে চিঠি ইস্যু করেছেন। চিঠিটি পাস করলে তবে সেতু নির্মাণ সম্ভব।'