সৌন্দর্যের এক মোহনীয় মায়াজাল গোপালগঞ্জের পদ্মবিল। প্রতিবারের মতো এবারও বর্ষা মৌসুমে এ বিলে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নিয়েছে পদ্মফুল। আর এ পদ্মবিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিভিন্ন জেলা থেকে ছুটে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।
অন্যদিকে, পদ্মফুল বিক্রি এবং দর্শনার্থীদের নৌকায় ঘুরিয়ে বাড়তি আয় করছেন বিল এলাকার শিশু ও যুবকেরা।
জানা যায়, ১৯৮৮ সাল থেকেই বর্ষা মৌসুমে এই বিলে প্রাকৃতিকভাবে পদ্মফুল জন্ম নেয়। বর্তমানে এটি পদ্মবিল নামেই বেশি পরিচিত।
পদ্মফুলের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন সকাল থেকেই দর্শনার্থীরা ভিড় জমান বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত জেলা গোপালগঞ্জের এ বিলে। নৌকা ভাড়া করে পুরো বিলের সৌন্দর্য ঘুরে দেখেন প্রকৃতি প্রেমীরা। প্রকৃতির এই অপরূপ শোভা উপভোগ করতে বিভিন্ন শিক্ষা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে দল বেধে এসে এ বিলে ঘুরে বেড়ান। আবার অবসরে পরিবার-পরিজন নিয়েও ভিড় করছেন অনেকে।
অন্যদিকে, পদ্মফুল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন এলাকার মানুষজন। পার্শ্ববর্তী হাট-বাজারে প্রতি ফুল ৫ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এতে দৈনিক ৪ থেকে ৫’শ টাকা আয় করছেন এসব বিক্রেতারা। তাছাড়া দর্শনার্থীদের নৌকায় ঘুরিয়ে বাড়তি আয় করছেন স্থানীয় নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
একটি নৌকায় একসঙ্গে ১০-১৫ জন নিয়ে বিল ঘুরিয়ে ঘণ্টায় ভাড়া নিচ্ছেন ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা। তাই পদ্মবিল শুধু সৌন্দর্য নয়, আয়ের একটি অন্যতম উৎসও বটে।
পদ্মবিলে ঘুরতে আসা আশিকুর রহমান জানান, ইউটিউবে পদ্মবিলের ভিডিও দেখে ভালই লেগেছে। তাই এ বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে এসেছি। পদ্মবিল ঘুরে অনেক আনন্দ পেয়েছি।
নুরুল আমীন নামের আরেক দর্শনার্থী জানান, পদ্মবিলের দৃশ্য এতো সুন্দর এখানে না আসলে বুঝতাম না। ১০০ টাকা নৌকা ভাড়া দিয়ে পুরো বিল ঘুরে দেখেছি। পদ্মফুল তুলেছি। অনেক ভাল লাগছে।
স্থানীয় মিন্টু মিয়া জানান, এখানে পদ্মফুল দেখতে প্রতিদিনই বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শত শত মানুষ আসে। নৌকা ভাড়া করে বিল ঘুরে সৌন্দর্য উপভোগ করে। এছাড়া এখানের অনেকেই পদ্মফুল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে। নৌকা চালিয়েও অনেকে বাড়তি আয় করছেন।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক রমেশ চন্দ্র ব্রম্ম জানান, বলাইকর বিলে বর্ষা মৌসুমে প্রাকৃতিকভাবে অসংখ্য পদ্মফুল জন্ম নেয়। বিভিন্ন রংয়ের পদ্মফুল একদিকে বিলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করছে, অন্যদিকে স্থানীয়দের জীবিকার মাধ্যমও হয়ে উঠেছে।