"চ্যানেল আইয়ে শাইখ সিরাজের 'হৃদয়ে মাটি ও মানুষ' অনুষ্ঠানে অভিনেত্রী ববিতার সুন্দর ছাদ বাগান দেখে ইচ্ছা জাগে কীভাবে ছাদবাগান করা যায়? এরপর অনেকের পরামর্শ নিয়ে আমার বাড়ির ছাদে শখের ছাদ বাগান শুরু করি। দেড় বছর পর এখন নিজের ছাদ বাগান দেখে নিজেই মুগ্ধ হই। নিজেকে আজ সফল মনে হচ্ছে।"
সম্প্রতি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-এর কাছে এভাবেই নিজের ছাদে বাগান করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার সরকারি কর্মকর্তা আসমান আলী। তিনি উপজেলা জাতীয় মহিলা সংস্থার সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ভেড়ামারা শহরের তালতলা এলাকা তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আসমান আলী বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন শখের ছাদবাগান। দোতলা বাড়ির ছাদে মাটির টব, প্লাস্টিকের বস্তা, ছোট আকৃতি ও বড় আকৃতির ড্রামের ভেতরে মাটি ভরে বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগানো হয়েছে। সেখানে শাক-সবজি, ফলজ ও ওষধিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়েছে। অনেক গাছে ঝুলছে ফল। যার মধ্যে- দেশি কমলা, চাইনিজ কমলা, পেয়ারা, লেবু, করমচা, মরিচ ও বেগুন আছে।
জানা গেছে, আসমান আলী গত বছরের শুরুতে ছাদবাগানে গাছ লাগানো শুরু করেন। বর্তমানে তার ছাদ বাগানে আম, পেয়ারা, দেশি কমলা, চাইনিজ কমলা, করমচা, মিষ্টি তেঁতুল, ডালিম, চেরিফল, লেবু, নাগা মরিচ, লাল জাম্বুরা, বেল, আতা ফল, বেগুন, পুঁইশাক, পেঁপে, সজনী, পুদিনা, কলমি শাক, তেজপাতা ও এলাচে গাছও রয়েছে। এছাড়াও অ্যালোভেরা, গোলাপ, মর্নিংগ্লোরিসহ নজরকাড়া ফুল গাছও শোভা পাচ্ছে।
আসমান আলী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, '২০১৮ সালের শুরুর দিকে কুষ্টিয়ার বৃক্ষ মেলা থেকে কমলা, পেয়ারা, আম ও লেবুর কয়েকটি গাছ কিনে নিজ বাড়ির ছাদের ওপর ড্রামে মাটি ভর্তি করে লাগায়। এরপর থেকেই বিভিন্ন নার্সারি থেকে বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন গাছের চারা কিনে নিয়ে বাগানে রোপণ করি। পরবর্তীতে গাছগুলোতে ফল আসা শুরু হলে উৎসাহ আরও বেড়ে যায়।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর ও বিকালে অফিস থেকে ফিরে লাগানো গাছগুলোর পরিচর্যা করি। নিজের হাতে লাগানো গাছের টাটকা ফল, সবজিগুলো দেখে মন জুড়িয়ে যায়। ছাদের বাগানে চাষ করা বিষমুক্ত ফল নিজেরা খাচ্ছি এবং আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের বাড়িতেও পাঠাচ্ছি।'
আনন্দ প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'গাছ থেকে নিজ হাতে ফল পেড়ে খাওয়ার মজাই আলাদা, আর নিশ্চিন্ত মনে বিষমুক্ত ফলও খেতে পারছি।'
তিনি আরও বলেন, 'খালবিলে কলমি লতা হলেও আমি ছাদে কলমি চাষ করে সফল হয়েছি। এছাড়াও বেগুনের চারা থেকে বীজ উৎপাদন করে চারা তৈরি করে রোপণ করেছি এবং অনেককেই সেই বেগুন গাছের চারা দিয়েছি। বাগান করা এখন আমার নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাগানটিকে আরও অনেক সুন্দর করে সাজাতে চাই। আরও বেশি বেশি গাছ লাগাতে চাই।'