পাটের আঁশ ছাড়িয়ে নারীদের বাড়তি আয়

মাদারীপুর, দেশের খবর

রফিকুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, মাদারীপুর | 2023-09-01 16:29:57

মাদারীপুরে পুরো জেলাজুড়েই চলছে পাট কাটা, জাগ দেওয়া, পাটের আঁশ ছাড়ানো ও শুকানোর কাজ। এ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার পাটচাষিরা। পাটের দাম মোটামুটি ভালো পাওয়ায় এ বছর চাষিদের লাভের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে পাট মৌসুম ঈদের সময়ে হওয়ায় বাড়তি আয়ের সন্ধানে পাটের আঁশ ছাড়ানোর কাজে হাত লাগিয়েছেন মাদারীপুরের নারীরাও।

কয়েক দিনের বৃষ্টি ও বর্ষায় নিকটস্থ নদী ও খাল-বিলে পানি আসায় সময়মতো পাট কেটে জাগ দিতে পারছেন শিবচর উপজেলার কৃষকরা। শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় অনেক কৃষকই নারীদের দিয়ে পাটের আঁশ ছাড়িয়ে নিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে নারীরা নগদ মূল্য না নিয়ে পারিশ্রমিক হিসেবে পাটখড়ি নিয়ে থাকেন। কিছু কিছু নারী নগদ টাকাও নিচ্ছেন।

শিবচর ও রাজৈর উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, অনেক নারীই নিজেদের জমির পাটের আঁশ ছাড়ানোর পাশাপাশি অন্যের পাটের আঁশ ছাড়িয়ে পাটখড়ি নিচ্ছেন।

রাজৈর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খাল-বিল ও রাস্তার পাশে নারীদের পাটের আঁশ ছাড়ানোর দৃশ্য চোখে পড়ে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আঁশ ছাড়িয়ে পাওয়া পাটখড়ি নারীরা আঁটি হিসেবে বিক্রি করেন। আবার অনেকে রান্নার জ্বালানি ও বাড়ির বেড়া, চালাসহ গৃহস্থালির নানা কাজের জন্য পাটখড়ি সংরক্ষণ করে রাখছেন।

শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি গ্রামে রাস্তার পাশে পাট থেকে আঁশ ছাড়াচ্ছিলেন হনুফা বিবিসহ। বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে তিনি জানান, আঁশ ছাড়ানোর বিনিমিয়ে পাটখড়ি নেন তিনি। স্থানীয় দরিদ্র নারীদের পাশাপাশি স্বচ্ছল কৃষক পরিবারের নারীরাও অলস সময়ে পাটের আঁশ ছাড়িয়ে বাড়তি আয় করছেন।

একই উপজেলার পূর্ব মির্জারচর গ্রামের বাতাসী বেগম বলেন, আমরা রান্না ও অন্যান্য কাজ শেষ করে সময় পেলে আঁশ ছাড়ানোর কাজ করি। আজ (৬ আগস্ট) আমি ও আমার মেয়ে রেশমা প্রায় ৭০ আঁটি খড়ি যোগাড় করেছি। জ্বালানি কাজে বছরে যে পরিমাণ খড়ি দরকার তা রেখে বাকিগুলো বাজারে বিক্রি করে দেই। বর্তমানে ১০০ আঁটি পাটখড়ির দাম প্রায় হাজার টাকা।

রাজৈর উপজেলার কবিরাজপুর এলাকার করিমন বিবির সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, অনেকেই সংসারে বাড়তি আয়ের আশায় সুযোগমতো এ কাজ করছেন। বাড়ির পুরুষের সঙ্গে উপার্জনে তারাও শরিক হচ্ছেন।

চলতি বছর পাটের দাম ও চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদারীপুরে পাটের আবাদ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, সোনালি আঁশের সুদিন ফিরতে শুরু করেছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় ভালো ফলন হয়েছেন।

মাদারীপুর জেলা কৃষি কর্মকর্তা জি এম এ গফুর জানান, গতবারের তুলনায় এ বছর জেলায় পাটের আবাদ বেশি হয়েছে। জেলায় চলতি বছর ৩৬ হাজার ৪৬৮ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। যা গতবারের চেয়ে ৩০০০ হেক্টর বেশি। ভালো ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা খুশি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর