মেহেরপুর জেলার খামারিরা চেয়ে আছেন আসন্ন ঈদের দিকে। বছর শেষে গরু বিক্রি করে দেখবেন লাভের মুখ, এটাই প্রত্যাশা। কিন্তু কোরবানির পশু হাটে নায্য মূল্য নিয়ে আতঙ্কে আছেন খামারিরা।
শনিবার (২৭ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, মেহেরপুরের রাইপুর গ্রামের সাফিকুল ইসলামের বাড়িতে রয়েছে দুটি গরু। নাম রেখেছেন লাল মিয়া আর ধলা মিয়া। লাল মিয়ার দাম ৯ লাখ আর ধলামিয়ার দাম ৫ লাখ।
খামারিরা জানায়, নেপালী, অস্টেলিয়ান, ফিজিয়ান, হরিয়ানসহ বিভিন্ন জাতের গরুর দাম কম-বেশি হয়ে থাকে। এসব গরু মোটাতাজা করে বিক্রি করছেন মেহেরপুরের গরু পালনকারী ও খামারিরা। দরিদ্র কৃষকের বাড়িতে দুয়েকটি করে গরু পালন হলেও খামারে রয়েছে বেশ কয়েকটি গরু।
এদিকে বসতবাড়িতেও গরু পালন করছে অনেক পরিবার। কোরবানীর চাহিদা লক্ষ্য করেই শেষ মুর্হূতের পরিচর্যা চলছে। স্বপ্নের গরু বিক্রির টাকায় মিটবে পরিবারের চাহিদা কিংবা ফিরবে স্বচ্ছলতা। কেউ জানান বাড়তি অর্থ দিয়ে আবারও নতুন গরু কেনার কথা।
জেলা প্রাণি সম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি কোরবানী মৌসূমে বিক্রি উপযোগী ৩৫ হাজার ৭৬৪টি গরু, ৬১৫টি মহিষ, ৫৮ হাজার ৯৫৯টি ছাগল ও ১ হাজার ৭৩২টি ভেড়া রয়েছে। খামারীরর সংখ্যা ৩ হাজার ১৯৮।
পূর্ব মালসাদহ গ্রামের খামারি এনামুল হক ও মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, মেহেরপুরে গ্রাম-শহর সবখানেই গরু পালিত হচ্ছে। গ্রামের একেকটি বাড়ি যেন একেকটি খামার। পরিবার প্রধান নারী-পুরুষ মিলে পরিচর্যা করেন গরুগুলো। গরুগুলো বিক্রির সময় তাদের খারাপ লাগে বলেও জানান তারা।
একইসঙ্গে শেষ মুর্হূতে ভারতীয় গরু আসলে গরু ব্যবসায়ীদের স্বপ্ন আর লাভাংশ দুটোই শেষ বিলীন হয়ে যেতে পারে জানান তারা।
আড়পাড়া গ্রামের খামারি সুলতান মাহমুদ শান্ত বলেন, 'জেলার আর্থ সামাজিক উন্নয়নে বড় ধরনের ভুমিকা পালন করছে খামারিরা। তাই কোরবানির পশু হাটে নায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকারকে আরো কঠোর হতে হবে।'
চাষী ও খামারিদের সাথে সুর মিলিয়ে জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'ঈদে প্রায় এক লক্ষ কোরবানীর পশু প্রস্তুত আছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত পশুগুলো যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।' সীমান্ত এলাকা দিয়ে যাতে গরু প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।