পরিবেশ দূষণে সবথেকে বেশি ক্ষতি করে ইটভাটা। আর কুষ্টিয়া জেলায় দেড় শতাধিক ইটভাটার মধ্যে মাত্র ২৬টি ইটভাটা স্থাপনে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র রয়েছে। তবুও কিভাবে এসব ইটভাটা চলছে তা খতিয়ে দেখা হবে। তবে আমার প্রথম কাজ হবে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়া ইটভাটা অচিরেই বন্ধ করা এবং কোনোভাবেই ড্রাম চিমনির ইটভাটা রাখা হবে না।
সম্প্রতি পরিবেশ অধিদফতর কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক পদে যোগদান করা মোঃ নয়ন মিয়া এভাবেই পরিবেশ নিয়ে করণীয় কার্যক্রম তুলে ধরতে কথা বলেন মাল্টিমিডিয়া অনলাইন নিউজ পোর্টাল বার্তা২৪.কম'র সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘বসবাসযোগ্য পরিবেশ গড়ে তুলতে হলে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত, সচেতন হওয়া উচিত। আর তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে আমাদেরকেই দায়িত্ব নিতে হবে।’
বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ রোধে কাজ করা, ইটভাটার অনুমোদন, পলিথিনের অতিরিক্ত ব্যবহাররোধে এবং নদীতে ডাইং এর কারণে পানিদূষণ এবং রাইসমিল ও কলকারখানার নির্গত ধোয়া প্রক্রিয়াজাতকরনের মাধ্যমে যাতে করে পরিবেশের ক্ষতি না হয় সে সব বিষয় নিয়ে কাজ করতে চান এই কর্মকর্তা।
কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার শহরের পাশে প্রবাহমান গড়াই নদীর তীর ঘেষে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন টেক্সটাইল মিল ও ডাইং কারখানা। পরিবেশ অধিদফতরের কোনো আইন না মেনে বিষাক্ত বর্জ্য গড়াই নদীতে ফেলছে। ফলে গড়াই নদীর পানি বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছে। এই সমস্ত মিল ও ডাইংয়ের নির্গত বিষাক্ত বর্জ্য সরাসরি নালা হয়ে গড়াই নদীর পানিতে মিশে যাচ্ছে। নদীর তলদেশে বর্জ্যের স্তূপে অগভীর হয়ে পড়ছে। এসব পুনরুদ্ধারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মোঃ নয়ন মিয়া।
পলিথিনের কুফল থেকে দেশবাসীকে রক্ষার জন্য সরকার ইতোমধ্যে সারাদেশে পলিথিন শপিং ব্যাগের উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ ও বিক্রয় বন্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু এর সঙ্গে মানুষের দীর্ঘদিনের অভ্যাস পরিবর্তনের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এসবের বিরুদ্ধেও অভিযান চালানো হবে বলে তিনি জানান।
মো: নয়ন মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'কুষ্টিয়ার খাজানগর এলাকার অনেক রাইসমিল ও অটো রাইসমিল এবং কলকারখানাগুলোর নির্গত ছাই, ধোয়া ও বর্জ্য আকাশে উড়ে যেভাবে পরিবেশের ক্ষতিসাধন করে। এগুলোতে ডাম্পিংয়ের মাধ্যমে এবং প্রক্রিয়াজাত করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কাজ করা হবে। এজন্য সকল মিল-মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়ে বৈঠক করে তা বাস্তবায়ন করব।'
তিনি মনে করেন, পরিবেশ দূষণ ও পরিবেশ সংরক্ষণ বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এ ব্যাপারটি সম্পর্কে আমাদের সচেতনতা আছে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট উদ্যোগের অভাবে তা ভেস্তে যেতে চলেছে।
তিনি বলেন, 'আমি মনে করি নতুন নতুন আইডিয়া বা ইনোভেশনের মাধ্যমে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সেগুলো বাস্তবায়ন করে বসবাসযোগ্য পরিবেশ গড়ে তুলব। এজন্য সর্বোপরি, পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে আমাদেরকেই কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।’