এটা কি একটা রাস্তা হলো? আক্ষেপ করেই এমন কথাগুলো বলছিলেন ইজিবাইক চালক করিম আলী। বেশ কয়েকজন যাত্রী নিয়ে কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর গেট থেকে ইজিবাইক ছেড়ে যাচ্ছিল বড় বাজারের দিকে। ট্রাফিক বক্স পেরিয়ে আগা ইউসুফ মার্কেটের সামনে এবড়ো থেবড়ো সড়কে যেন উল্টে পড়ার অতিক্রম।
ইজিবাইক চালক এভাবেই বলে ওঠেন 'এই কি একটা রাস্তা হলো'। তিনি কুষ্টিয়া শহরতলির জুগিয়া এলাকার বাসিন্দা। ইজিবাইক চালিয়ে তিনি জীবন যাপন করেন। মজমপুর থেকে বড় বাজার পর্যন্ত প্রতিনিয়তই তার ইজিবাইকে করে যাওয়া আসা। অথচ দীর্ঘদিন সড়ক সংস্কার না হওয়ায় আক্ষেপ শুধু করিম আলীরই নয়। আক্ষেপ এই সড়কে চলাচলরত প্রতিটি ইজিবাইক চালক ও যাত্রী সাধারণদের।
কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্র এনএস রোড। মজমপুর গেট থেকে শুরু হয়ে পাঁচ রাস্তার মোড়, ছয় হয় রাস্তার মোড়, চার রাস্তার মোড় এবং এনএস রোড হয়ে বড়বাজার চলে গেছে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি।
কাবিল শেখ নামের মঙ্গলবাড়িয়া এলাকার ইজিবাইক চালক বার্তা২৪.কম জানান, দীর্ঘ চার বছর ধরে ইজি বাইক চালাচ্ছেন তিনি। তিনি বলেন, 'দীর্ঘ দিন ইজিবাইক চালায় আমি শহরের মধ্যেই। মজমপুর থেকে বড় বাজার পর্যন্ত প্রতিদিন অন্তত ১০ থেকে ১৫ বার যাওয়া আসা করা লাগে। কিন্তু দীর্ঘ দুই বছর ধরে ও এসব সড়কের কাজ সংস্কার না হয় দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।'
স্থানীয়রা জানান, মজমপুর থেকে বড় বাজার পর্যন্ত সড়ক যেন দুই ভাগে বিভক্ত। কিছু কিছু জায়গায় ভাঙা গর্ত রয়েছে। আবার কিছুদূর আগালে রাস্তা ভালো পাওয়া যাবে। কিন্তু তারপর আবারও ভাঙাচোরা গর্ত।
মজমপুর শহরের মা হার্ডওয়ারের স্বত্বাধিকারী ইয়ার আলী বার্তা২৪.কম বলেন, 'আমার দোকানের সামনে থেকে শুরু করে পাঁচ রাস্তার মোড় পর্যন্ত রাস্তার একপাশ ভালো আরেক পাশে ভাঙাচোরা গর্ত'র কারণে প্রতিদিনই অ্যাকসিডেন্টের ঘটনা ঘটে। অথচ দীর্ঘদিনেও এই সড়কটি সংস্কার করা হয়নি।'
কিরণ মাহমুদ নামের এক পথযাত্রী বার্তা২৪.কম বলেন, 'শহরের ব্যস্ততম এলাকায় এনএস রোড এর চাঁদ সুলতানা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে থেকে সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সামনের সড়ক দুই বছরের দীর্ঘ সময় ধরে ভাঙাচোরা গর্ত সৃষ্টি হয়ে আছে। কোনো এক অদৃশ্য কারণে এই রাস্তাটুকু পিচ ঢালাই করা হয়নি। আর এই দীর্ঘ দুই বছরে জনগণের ভোগান্তি বেড়েই চলেছে।'
একতারা মোড় এলাকার মুসাফির হোটেলের স্বত্বাধিকারী শাহিন আলী বার্তা২৪.কম বলেন, 'সিঙ্গার মোড় থেকে লাভলী টাওয়ার পার হয়ে রাস্তার মাঝে থেকে এক পাশে আড়াই ইঞ্চি মত পিচ ঢালাই দেওয়া এবং আর একদিকে আড়াই ইঞ্চি মতো এবড়ো থেবড়ো অবস্থা। অথচ এটুকু সংস্কার করেনি কর্তৃপক্ষ।
কুষ্টিয়া পৌরসভার শহর পরিকল্পনাবিদ রানভির আহমেদ বার্তা২৪.কম বলেন, 'পৌরসভার মাধ্যমে বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড হাতে নেওয়া হয়েছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে জোরেশোরে কাজ চলছে। ড্রেনেজ কাজ সম্পন্ন হলেই সড়কের কাজ সম্পন্ন করা হবে। তখন শহরবাসী বেশ উপকৃত হবে এবং শহরটা নতুন মনে হবে।'