ঈদ উদযাপন বলে কথা; দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করেই সুন্দরবনপ্রেমীরা ছুটে এসেছেন করমজলে। ঈদের ছুটি কাটাতে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসা পর্যটকদের আনাগোনায় মুখর হয়ে উঠেছে সুন্দরবনের দর্শনীয় স্পটগুলো। দর্শনার্থীদের ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে বনপ্রহরীদের।
বনবিভাগ বলছে বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যেও ঢাকা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, যশোর ও সাতক্ষীরাসহ দূরদূরান্ত থেকে পর্যটকরা সুন্দরবন দেখার জন্য ছুটে আসছেন। তবে আবহাওয়া যদি এর চেয়ে আর খারাপ না হয়ে তাহলে দর্শনার্থীদের ভিড় থাকবে আরো কয়েকদিন।
ঈদের দিন সুন্দরবনে দর্শনার্থীদের খুব বেশি ভিড় না থাকলেও ঈদের পরদিন উপচেপড়া ভিড় করমজলে। শুধু করমজলই নয় হাড়বাড়িয়া, হিরণপয়েন্ট, কটকা, কচিখালীসহ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়ে চলেছে। করমজল সুন্দরবনের কাছাকাছি ও যাতায়াতে সুবিধাজনক হওয়ায় সবসময়ই এখানে দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে।
বৃহস্পতিবারও ব্যতিক্রম ছিলো না করমজলের চিত্র। সুন্দরবনের আকর্ষণীয় এই স্পটে দেখা গেছে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে এসেছেন দর্শনার্থীরা। ছোট-বড় সবাই প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্যে মুগ্ধ হয়েছেন। কেউ কেউ সুন্দরবনে এসেছেন প্রথম, তাদের মধ্যে আগ্রহ ও উদ্দীপনা ছিলো চোখে পড়ার মতো। আবার কেউ এসেছেন দ্বিতীয়-তৃতীয়বারের মতো, কারণ এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তাদের টেনে এনেছে।
করমজলে হরিণ, বানর, কুমির, কচ্ছপসহ নানা ধরনের বন্যপ্রাণী আগত দর্শনার্থীদের অন্যতম আকর্ষণ। এখানে ঘোরাঘুরির জন্য বনপ্রহরীদের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাও রয়েছে।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মোংলার পশুর চ্যানেল দিয়েই প্রবেশ করতে হয় সুন্দরবনে। পশুর নদীর দুই পাশজুড়ে সুন্দরবন। এ নদীতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা পণ্যবাহী বিদেশি জাহাজ ও জাহাজের কার্যক্রম আরো বেশি আকৃষ্ট করছে দর্শনার্থীদের।
পর্যটন ব্যবসায়ী দ্য সাউদার্ন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী মো. মিজানুর রহমান বলেন, ঈদের দুই তিনদিন আগ থেকে যেভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে তাতে ভেবেছিলাম এবার ব্যবসা খুবই মন্দা যাবে, অলস বসে থাকতে হবে। কিন্তু এখন দেখছি খারাপ আবহাওয়ার মধ্যেও দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসছেন। তাই আমাদের এখানকার পর্যটনবাহী লঞ্চ, ট্রলার, জালিবোট কোনটাই ঘাটে নেই। সবই দর্শনার্থীদের নিয়ে বনের বিভিন্ন স্পটে রয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির বলেন, বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও পর্যটকরা সুন্দরবন ভ্রমণে আসছেন। ঈদের দিন বিকেল থেকে লোকজন আসতে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবারও বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীর আগমন ঘটেছে। এবার ঈদের ছুটি যেহেতু বেশ বড় তাই আবহাওয়া মোটামুটি ভালো থাকলে আগামী আরো কয়েকদিন ধরে পর্যটকের ভিড় থাকবে করমজলে।