বরগুনায় বেঁড়িবাধে ভাঙনের ফলে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি, ফসলি জমিসহ অসংখ্য গাছপালা। অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে ১৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। বসত বাড়ি ও ফসলি জমি রক্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত এসব বাঁধ দ্রুত মেরামত ও স্থায়ী সুরক্ষার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, পর্যায়ক্রমে মেরামত করা হবে ক্ষতিগ্রস্ত সব বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।
সরেজমিনে জানা যায়, বরগুনা জেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২২টি পোল্ডারের ৩৭ পয়েন্টে ১৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। জেলার সাড়ে ৯০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, মহাসেনসহ একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় সাড়ে পাঁচ’শ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত এ বাঁধ সম্পূর্ণ মেরামত হতে না হতেই ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে নতুন করে আবারও একাধিকস্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বরগুনা জেলায় ২২টি পোল্ডারে প্রায় সাড়ে ৯০০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৩৭টি পয়েন্টে ১৮ কিলোমিটার বাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া বাকি যেসব বাঁধ রয়েছে, সেখানেও পানির উচ্চতা বেড়ে গেছে।
এগুলোর মধ্যে বরগুনার পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বর নদের তীব্র ভাঙনে বরগুনা সদর উপজেলার ছোট বালিয়াতলী, নলটোনা, লাকুরতলা, ডালভাঙ্গা, আঙ্গারপাড়া, জাঙ্গালিয়া, পাতাকাটা, গুধিঘাটা, গুলিশাখালী, চালিতাতলী, নলী, পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া, চরলাঠিমারা, রুহিতা, জিনতলা, পদ্মা, বামনা উপজেলার রামনা, শফিপুর, চেচাং, শিংড়াবুনিয়া, বড় তালেশ্বর, আমতলী উপজেলার পশরবুনিয়া, পশ্চিম ঘটখালী, পূর্বচিলা, বেতাগী উপজেলার বলয়বুনিয়া, দেশান্তরকাঠী, ঝোপখালী, তালতলী উপজেলার তেতুলবাড়িয়া এবং হুয়ার স্লইজ পয়েন্টগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এসব এলাকায় তীব্র ভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে বসতবাড়ি, ফসলি জমিসহ অসংখ্য গাছপালা।
স্থানীয়রা জানায়, যেকোনো সময় দুর্যোগ অথবা জোয়ারের পানি বেড়ে গেলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে উপকূলীয় এ জেলার কয়েক লাখ মানুষকে।
আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম নুরুল ইসলাম বার্তা ২৪.কমকে বলেন,পায়রা নদীর ভাঙনে ওই এলাকার শত শত ঘর-বাড়ি ও হাজার হাজার একর ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। নদীর পাড়ের এসব মানুষকে রক্ষা করতে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের বিষয়ে তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।
বরগুনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বার্তা২৪.কমকে জানান,পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ চিহ্নিত করে দ্রুত মেরামতের জন্য ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।