চাষিদের কাছ থেকে ধান ক্রয় শুরু করেছে খাদ্য অধিদফতর। তারপরেও বাজারে ধানের দাম বাড়ছে না। এর পেছনে উৎপাদন ও সংগ্রহের মাঝে বড় ব্যবধানকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। ধান বিক্রির সুযোগ পাওয়া চাষিদের মাঝে স্বস্তি বিরাজ করলেও অন্যান্য চাষিদের ক্ষোভ-হতাশা থেকেই যাচ্ছে। তাই ধান বাজার নিয়ন্ত্রণের দাবি জানান কৃষকরা।
মঙ্গলবার (২১ মে) মেহেরপুর জেলায় বেরো ধান সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও মেহেরপুর-১ আসনের এমপি ফরহাদ হোসেন ও মেহেরপুর-২ আসনের এমপি মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের বিষয়ে অনড়।
১ হাজার ৪০ টাকা দরে প্রতি মণ ধান ক্রয় করছে খাদ্য অধিদপ্তর। কৃষকদের সরাসরি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ কার্যক্রমে ধান বাজারে ইতিবাচক প্রভাবের আশায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কিন্তু উৎপাদন ও ক্রয়ের পরিমাণের মধ্যে বড় ফারাক রয়েছে। তাই ধানের দর বৃদ্ধিতে কতটুকু সহায়ক হবে তা দেখার জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষার কথা জানালেন ধান ব্যবসায়ীরা।
মেহেরপুর জেলায় এক লাখ মেট্রিক টনের বেশি ধান উৎপাদন হয়েছে। সরকার ক্রয় করছে মাত্র ৬৩৪ মেট্রিক টন। এতে কত জন চাষি ধান বিক্রি করতে পারবেন? এমন প্রশ্ন চাষিদের।
খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর সদর উপজেলায় ৩০৪ মেট্রিক টন, গাংনী উপজেলায় ২১৭ মেট্রিক টন ও মুজিবনগর উপজেলায় ১১৩ মেট্রিক টন বোরো ধান কিনবে খাদ্য অধিদপ্তর।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে জেলায় ২১ হাজার হেক্টর জমিতে এক লাখ মেট্রিক টনের বেশি ধান উৎপাদিত হয়েছে। সে হিসেবে সরকার ধান কিনবে উৎপাদনের মাত্র ৩ ভাগ। এতে কতজন চাষির উপকার করা সম্ভব? এমন প্রশ্ন চাষিদের।
কয়েকজন চাষি জানান, বাজারে ৫০০-৬৫০ টাকা দরে ধান বিক্রি হচ্ছে। এক বিঘা ধান উৎপাদন খরচ ১৪-১৬ হাজার টাকা। ধান বিক্রি করে বিঘায় লোকসান ৪-৬ হাজার টাকা। সরকার ধান ক্রয় শুরু করলে ধানের দর বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এবার তেমনটি হচ্ছে না।
স্থানীয় ধান ব্যাপারীরা বলেন, এ জেলার ধান মূলত কুষ্টিয়ার খাজানগর অটো রাইস মিলে বিক্রি হয়। মিলে তেমন চাহিদা নেই। ফলে বাজারে ধানের দর বৃদ্ধি পাচ্ছে না।
জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে গম ক্রয় করা হবে ১ হাজার ৬৬ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৬২ মেট্রিক টন, গাংনীতে ৭৩৪ মেট্রিক টন ও মুজিবনগরে ৭০ মেট্রিকটন।
একই সাথে স্থানীয় মিল মালিকদের কাছ থেকে ১ হাজার ৫২৯ মেট্রিকটন চাউল ক্রয় করা হবে। এর মধ্যে সদরে ৭০২ মেট্রিকটন, গাংনীতে ৫৭৮ মেট্রিকটন ও মুজিবনগরে ২৪৯ মেট্রিকটন।