বঙ্গোপসাগরে ধরা পড়ছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ইলিশ। আর তাই বাংলাদেশের ২য় ও অন্যতম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বরগুনার পাথরঘাটার বিএফডিসি ঘাট এখন কর্ম চাঞ্চল্যতায় মুখরিত। ঘাটের পাইকার, আড়তদার, জেলে ও শ্রমিকদের পদচারণায় মুখরিত অবতরনকেন্দ্রটি। অন্য সময়ের থেকে মাছের দাম কিছুটা কমলেও সাগরে পর্যাপ্ত মাছ ধরা পড়ায় খুশি এ পেশায় জড়িত সকলেই।
পাথরঘাটার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গিয়ে দেখা যায় এফ বি ইয়ামিন, এফ বি সোলায়মান, এফ বি নুর জাহান, এফ বি সোমাসহ প্রায় ৪৫টি ট্রলার ভিড়েছে ঘাটে। আর ঘাটে ভিড়বে বলে অপেক্ষায় আছে আরও প্রায় ৭০ টি ট্রলার। সবগুলো ট্রলারে ইলিশে ভর্তি।
এসব ট্রলারের মাঝি ও জেলেদের সাথে কথা বললে তারা বার্তা২৪.কমকে বলেন, সাগরের আবহাওয়া অনুকূলে থাকা ও জলদস্যুদের প্রবণতা কম থাকায় প্রত্যেকটি ট্রলার ব্যাপক মাছ পাচ্ছে। আর সাগরের এমন পরিবেশ বজায় থাকলে বিগত বছরের সব লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন তারা।
বিএফডিসি ঘাটের পাইকারি বাজারে দেখা যায়, মাছ কেনা-বেচায় পাইকার, আড়তদার ও শ্রমিকরাও পার করছে ব্যস্ত সময়। পাথরঘাটা বিএফডিসির ইলিশ মাছের সব থেকে বড় পাইকারি ব্যবসায়ী কালাম মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন বিএফডিসি ঘাটে গড়ে প্রায় ২০ থেকে ২৫ মেট্রিক টন মাছ উঠতো। তবে এ বছর সেই রেকর্ড ভেঙে হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ।
গত ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় প্রতিদিন ৪০ থেকে ৬০ মেট্রিকটন মাছ উঠছে বিএফডিসিতে।
ইলিশ মাছের এমন বৃদ্ধিতে খুশি শ্রমিকরাও। শ্রমিকদের সাথে কথা হলে একাধিক শ্রমিক বার্তা২৪.কমকে জানান, মাছ কম থাকলে প্রতিদিন ১০০-১৮০ টাকা আয় করেন। তবে এখন তারা প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত আয় করেন।
এ বিষয়ে বরগুনা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘র্যাবের অক্লান্ত পরিশ্রম ও অভিযানে বেশিরভাগ জলদস্যুবাহিনী আত্মসমর্পণ করায় সাগরে মাছ ধরার নিরাপদ পরিবেশ ফিরে পেয়েছে সারা দেশের জেলেরা।’
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক লেঃ এম নুরুল আমিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'সরকারি নানান পদক্ষেপে জেলেরা এখন সচেতন। তারা জাটকা ইলিশ না ধরায় সাগরে বৃদ্ধি পেয়েছে মাছের পরিমাণ। এ ছাড়াও প্রতি বছর মা ইলিশ প্রজননের মৌসুমে মাছ ধরা বন্ধ রাখায় ইলিশ এখন পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে সাগরে।'
আগস্টের শেষ থেকে এখন পর্যন্ত গড়ে প্রতিদিন ৫৪ মেট্রিক টন মাছ উঠছে এ অবতরণ কেন্দ্রে, যাতে প্রতিদিন প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় সম্ভব। এর আগে গড়ে প্রতিদিন মাত্র ২ মেট্রিকটন মাছ উঠতো এবং রাজস্ব আদায় হতো মাত্র ১৪ হাজার টাকা।